ক্রমহ্রাসমান প্রতিদান বা পরিবর্তনীয় অনুপাত এর নিয়ম ব্যাখ্যা করো | law-of-diminishing-returns

ক্রমহ্রাসমান প্রতিদান বা পরিবর্তনীয় অনুপাত এর নিয়ম ব্যাখ্যা করো

স্বল্পকালীন উৎপাদন অপেক্ষকের ক্ষেত্রে যে নিয়মটি প্রযোজ্য হয়, সেই নিয়মকে পরিবর্তণীয় অনুপাতের নিয়ম বা ক্রমহ্রাসমান প্রতিদানের নিয়ম বলা হয়। এই নিয়মের মূল কথা হল এই যে নির্দিষ্ট পরিমাণ স্থির উপকরণ এর সঙ্গে যদি পরিবর্তনীয় উপকরণের নিয়োগের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি করা হতে থাকে তাহলে পরিবর্তনীয় উপকরণটির মোট উৎপাদন প্রথমের দিকে বৃদ্ধি পাবে এবং প্রান্তিক উৎপাদন ও গড় উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং শেষের দিকে পরিবর্তনীয় উপকরণটির মোট উৎপাদন কমতে শুরু করবে ও প্রান্তিক উৎপাদন ঋণাত্মক (-) হবে।

law-of-diminishing-returns

বিষয়টিকে উপরের চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হল-

এই তথ্যটির ব্যাথার জন্য নিম্নলিখিত অনুমান দুটি ধরে নেওয়া হয়,

1) প্রযুক্তি বা কলাকৌশল অপরিবর্তিত আছে।
2) মূলধনের পরিমাণ স্থির রেখে ফার্মের উদ্যোক্তা কেবলমাত্র শ্রম নিয়োগের পরিমাণ পরিবর্তন করতে পারে।

এই দুটি অনুমানের ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তনীয় অনুপাতের নিয়মটি বিশদে ব্যাখ্যা করা হল। উপরের রেখা চিত্রে অনুভূমিক অক্ষের শ্রম নিয়োগ এর পরিমাণ এবং উলম্ব অক্ষে ফার্মের মোট উৎপাদন প্রান্তিক উৎপাদন এবং গড় উৎপাদন পরিমাপ করা যাচ্ছে। অন্যান্য উৎপাদন স্থির রেখে নির্দিষ্ট পরিমাণ শ্রম নিয়োগ করে ফার্মের উদ্যোক্তা যে উৎপাদন পেয়ে থাকেন, তাকে শ্রমের মোট উৎপাদন (TP) বলে। অন্যদিকে মোট উৎপাদনের(TP) পরিমাণকে মোট শ্রম নিয়োগের পরিমাণ দিয়ে ভাগ করলে গড় উৎপাদন(AP) পাওয়া যায়। আবার অতিরিক্ত নিয়োগের ফলে ফার্মের মোট উৎপাদন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় তাকে প্রান্তিক উৎপাদন(MP) বলে।

পরিবর্তনের অনুপাতের নিয়মটি প্রকৃতপক্ষে উৎপাদনের তিনটি স্তরের সমষ্টি মাত্র শেষ তিনটি স্তর হলো নিম্নরূপ

১ নম্বর পর্যায়: এই পর্যায়ে ফার্মের মোট উৎপাদন ক্রমবর্ধমান প্রান্তিক উৎপাদন ও গড় উৎপাদন উভয়ই ধনাত্মক তবে প্রান্তিক উৎপাদন > গড় উৎপাদন। (MP>AP)

২ নম্বর পর্যায়: মোট উৎপাদন ক্রমবর্ধমান, প্রান্তিক উৎপাদন ও গড় উৎপাদন উভয়েই ধনাত্মক তবে প্রান্তিক উৎপাদন < গড় উৎপাদন। (MP < AP)

৩ নম্বর পর্যায়: মোট উৎপাদন ক্রমহ্রাসমান এবং প্রান্তিক উৎপাদন ঋণাত্মক হয়।

উপরের এই তিনটি পর্যায়কে একত্রে পরিবর্তনীয় অনুপাতের নিয়ম বা ক্রমহ্রাসমান অনুপাতের নিয়ম বলা হয়। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ এই যে, উৎপাদনের প্রথম ও তৃতীয় পর্যায়কে অনঅর্থনৈতিক স্তর বলা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়েকে উৎপাদনের অর্থনৈতিক স্তর বলা হয়। যে কোনো উদ্যোক্তার পক্ষে দ্বিতীয় স্তরে উৎপাদন করাই লাভজনক।

Leave a Comment